প্রকাশিত: : জুন ১৭, ২০২৫, ০৭:০৮ পিএম
শুধু বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসে নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রতিবাদে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ বয়কট করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আজ মঙ্গলবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঈদের ছুটির পর শুরু হওয়া দ্বিতীয় দফা সংলাপে জামায়াত অংশ নেয়নি। তবে আগামীকাল থেকে তারা আলোচনায় ফিরতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ জানান, শুধু বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করায় সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে জামায়াত আজ সংলাপে যায়নি, তবে সরকার তাদের অবস্থান পরিষ্কার করলে তারা আবারও আলোচনায় ফিরতে পারে।
জানা গেছে, গত ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক এবং যৌথ বিবৃতি থেকেই শুরু হয় এই ক্ষোভের সূত্রপাত। বিবৃতিতে বলা হয়, বিচার ও সংস্কারের কিছু অগ্রগতি হলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব। বিষয়টি জামায়াত নেতারা `নিরপেক্ষতার ব্যত্যয়` হিসেবে দেখছেন।
জামায়াত দাবি করছে, একমাত্র বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতি অবিচার। এতে করে মনে হতে পারে, বিএনপিই একমাত্র গ্রহণযোগ্য শক্তি, আর বাকি দলগুলো গৌণ। এ ধরনের বার্তা দিলে নির্বাচনী মাঠে অসাম্য ও পক্ষপাতিত্ব বাড়বে বলে আশঙ্কা তাদের।
জামায়াতের মতে, রমজানের আগেই নির্বাচন হওয়া উচিত—এই মত তারা আগেই জানিয়েছে। কিন্তু লন্ডনে কেবল বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে নির্বাচন সময় নির্ধারণ করে পরে সেটি ঘোষণার মাধ্যমে পুরো প্রক্রিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে।
এক জামায়াত নেতা বলেন, সরকার যদি সব দলের সঙ্গে সমান আচরণ না করে, তাহলে জামায়াত ভবিষ্যতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে কি না, তা পুনর্বিবেচনা করবে। সংলাপ অর্থহীন হয়ে যাচ্ছে বলেও তাদের মত, কারণ সরকার শুধুমাত্র বিএনপির মতামতের ভিত্তিতেই ঐকমত্য তৈরি করছে বলে তারা মনে করছে।
আজকের সংলাপে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন পদ্ধতি এবং বিরোধীদলের সংসদীয় কমিটির সভাপতিত্ব সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব ইস্যুতেই বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের মতবিরোধ বিদ্যমান।
জামায়াতের নেতারা বলছেন, তারা বারবার ছাড় দিলেও সরকার বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় এগিয়ে যাচ্ছে, যা প্রক্রিয়াটিকে একতরফা করে তুলছে। তাই সংলাপ থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।