প্রকাশিত: : এপ্রিল ২৬, ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, দেশের সামনে যে সংস্কারের সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা কোনো অবস্থাতেই হাতছাড়া করা উচিত নয়।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জামায়াতের সঙ্গে এক বৈঠকের শুরুতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে অবস্থান করছি। সাহসী শহীদদের আত্মত্যাগের ফলেই আজকের এই সুযোগ এসেছে। এটি অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে কেউ নিপীড়নের শিকার হবে না এবং কাউকে বিচারবহির্ভূত শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে না।
জাতীয় ঐক্যমত্যের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা দ্রুত একটি জাতীয় ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে চাই। এ প্রক্রিয়ায় সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ জরুরি। এটি কেবল কোনো একক রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়, বরং পুরো জাতির আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।”
তিনি জানান, প্রয়োজন হলে আলোচনার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। একসঙ্গে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন সম্ভব।
জামায়াতের পক্ষ থেকে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেয়।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের এ আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
এ সময় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ ও এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। এছাড়া কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম খান মিলন, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির আলোচনায় অংশ নেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেওয়া রাষ্ট্রীয় সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য তৈরির লক্ষ্যে চলতি বছরের ২০ মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালাচ্ছে কমিশন।
এখন পর্যন্ত কমিশন বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ ১৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করেছে।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত এ কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের ওপর একটি জাতীয় ঐক্যমত্য গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
কমিশন ইতোমধ্যে সাংবিধানিক, জনপ্রশাসন, নির্বাচনী, বিচার বিভাগীয় এবং দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের পাঁচটি মূল সুপারিশ তৈরি করে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৩৪টি দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে।
কমিশন মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রথম দফার আলোচনা শেষ করে, একই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু করার পরিকল্পনা করেছে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে একটি জাতীয় ঐক্যমত্যে পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে তাদের।