প্রকাশিত: : জুলাই ১২, ২০২৫, ০১:১৬ এএম
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতা ও নিপীড়নের মুখে গত দেড় বছরে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) শুক্রবার (১১ জুলাই) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের গণহত্যার সময় ৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পর এটিই সবচেয়ে বড় নতুন ঢল। এবারের নতুন শরণার্থীদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু।
ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে, জুন ২০২৫ পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নতুন করে ১ লাখ ২১ হাজার রোহিঙ্গার নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। তবে আরও অনেকেই ক্যাম্পে অবস্থান করছেন, যাদের এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে শনাক্ত করা যায়নি।
মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থানের কারণে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলো ইতোমধ্যে বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী এলাকায় পরিণত হয়েছে।
নতুন এই ঢলে ক্যাম্পের বিদ্যমান সহায়তা ব্যবস্থায় তীব্র চাপ পড়েছে। খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও আশ্রয়ের মতো মৌলিক সেবার জন্য নতুন রোহিঙ্গারা অনেকটাই আগের বাসিন্দাদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় দাতাদের অর্থ সংকটে পড়ার কারণে জরুরি সেবাগুলো ব্যাহত হচ্ছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে, আর ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে খাদ্য সহায়তা। এছাড়া, প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষাও বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
এই সংকটে রোহিঙ্গাদের মধ্যে হতাশা ও অনিশ্চয়তা বাড়ছে উল্লেখ করে ইউএনএইচসিআর জানায়, অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছে।
সংকট নিরসনে রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে না আসা পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা।