প্রকাশিত: : এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ০৭:৪৩ পিএম
কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ পারমাণবিক শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানকে `সর্বোচ্চ সংযম` প্রদর্শনের আহ্বান জানানোর পরও গত রাতভর কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা জুড়ে (এলওসি) গুলি বিনিময় করেছেন দেশগুলো।
`শত্রুভাবাপন্ন` প্রতিবেশী দেশ দুটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
গত মঙ্গলবার ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ পর্যটক নিহত হন। এর দুই দিন পর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির এই ঘটনা ঘটল।
এএফপি জানায়, প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময়ের মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বন্দুকধারীর এমন ন্যক্কারজনক হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে `আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ`-কে সমর্থনের অভিযোগ এনেছে ভারত। এতে দেশ দুটির সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের সরকারি কর্মকর্তা সৈয়দ আশফাক গিলানি আজ এএফপিকে বলেন, `কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর বিভিন্ন স্থানে সেনারা গুলি বিনিময় করেছে।`
`তবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর কোনো গুলি চালানো হয়নি`, বলেন তিনি।
ভারতীয় সেনাবাহিনীও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ছোট অস্ত্রের সীমিত গুলি চালানো হয়েছে। তবে গোলাগুলি শুরু করে পাকিস্তান। বিপরীতে `কার্যকর প্রতিক্রিয়া` দেখানো হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক গতকাল নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, `অর্থপূর্ণ পারস্পরিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে দেশ দুটির সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হতে পারে এবং হওয়া উচিত।`
`আমরা উভয় সরকারের কাছেই সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। পরিস্থিতির আর যেন কোনো অবনতি না হয়`, বলেন তিনি।
ভারতীয় পুলিশ তিনজন পলাতক বন্দুকধারীর মধ্যে দুজনকে `পাকিস্তানি` হিসেবে শনাক্ত করার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এই হামলার পর প্রথম বক্তব্যে মোদি বলেন, `আমি সমগ্র বিশ্বকে জানাচ্ছি: ভারত প্রতিটি সন্ত্রাসী ও তাদের মদদদাতাদের চিহ্নিত করবে, ট্র্যাক করবে এবং শাস্তি দেবে।`
`আমরা পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত তাদের খুঁজব`, বলেন তিনি।
এদিকে নিজেদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে ইসলামাবাদ পেহেলগাম হামলার সঙ্গে পাকিস্তানকে যুক্ত করার প্রচেষ্টাকে `অর্থহীন` বলে আখ্যায়িত করেছে। পাশাপাশি ভারতের যেকোনো পদক্ষেপের পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠক শেষে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, `পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের নিরাপত্তার জন্য যেকোনো হুমকিকে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করা হবে।`