প্রকাশিত: : মার্চ ২৪, ২০২৫, ০৭:১২ পিএম
গত জুলাইয়ে ‘দ্য ল্যানসেট’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কারণে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ইজরায়েলি হামলায় ধ্বংস হওয়া উপত্যকা। ছবি: গেটি ইমেজ
গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় সরকারি হিসাবেই মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মরদেহ ধরলে এই সংখ্যা ৬১ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আহত হয়েছেন লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। খবর: আল জাজিরা।
রোববার (২৩ মার্চ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫০ হাজার ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ২৭৪।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কারণ রোববার রাতে খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের সার্জারি ভবনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আগুন ধরে যায়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত এক বিবৃতিতে হামলার কথা স্বীকার করেছে, দাবি করেছে, তারা হাসপাতালে হামাসের একজন ‘গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে’ লক্ষ্যবস্তু করেছিল।
এর আগে, রোববার খান ইউনিস ও রাফায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন বলে চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে।
ইসরায়েল জানুয়ারি মাসে হামাসের সঙ্গে করা যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানায়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর গাজা থেকে পুরোপুরি সরে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তারা তা করেনি। ফলে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু হয়েছে।
গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতদের তালিকায় এখনো ১১ হাজার নিখোঁজ রয়েছেন, যাদের মৃত ধরে নেওয়া হচ্ছে।
গত জুলাইয়ে ‘দ্য ল্যানসেট’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কারণে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক ওমর রহমান বলেছেন, "ইসরায়েল কেবল হামাস সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করার দাবি করলেও বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন। বেসামরিক নাগরিক ও অবকাঠামো ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করা হয়েছে, যার ফলে শিশুমৃত্যুর হার ভয়াবহভাবে বেড়েছে।"
গাজা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, "৫০ হাজার নিহতের সংখ্যা শুধুমাত্র সরকারি হিসাব। বহু মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে, যাদের তালিকাভুক্ত করা যায়নি। এদের মধ্যে ১৭ হাজার শিশু। গাজার একটি গোটা প্রজন্ম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।"