প্রকাশিত: : জুন ১৯, ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম
বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তির প্রসার ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার। ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে ব্যবসা, শিক্ষা, বিনোদন ও রাজনীতি—প্রতিটি ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব এখন ব্যাপক।
জার্মানভিত্তিক অনলাইন পরিসংখ্যান সংস্থা স্ট্যাটিস্টা জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৫২২ কোটি মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়, যা বৈশ্বিক জনসংখ্যার প্রায় ৬৩.৮ শতাংশ। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৮ সালের মধ্যেই এই সংখ্যা ৬০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এই হার ছিল প্রায় ৫৯ শতাংশ। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সাশ্রয়ী স্মার্টফোনের সহজ প্রাপ্যতা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের বিস্তার বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্বব্যাপী সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের বড় অংশই স্মার্টফোন নির্ভর। একজন গড় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী দৈনিক প্রায় ১৫১ মিনিট, অর্থাৎ আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় সোশ্যাল মিডিয়া ও মেসেজিং অ্যাপে কাটান, যা ২০১৫ সালের তুলনায় প্রায় ৪০ মিনিট বেশি।
অন্যদিকে ডিমান্ডসেইজ-এর এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ২১ কোটি মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মানসিক স্বাস্থ্য ও দৈনন্দিন জীবনে—বিশেষ করে তরুণদের ক্ষেত্রে। কিশোর-কিশোরীরা গড়ে প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ৭ ঘণ্টা ২২ মিনিট এবং ৮-১২ বছর বয়সী শিশুরা প্রায় ৪ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট স্ক্রিনের সামনে কাটায়।
বর্তমানে ফেসবুক বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, যার সক্রিয় ব্যবহারকারী সংখ্যা ৩০৭ কোটির বেশি। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছেন ২৫-৩৪ বছর বয়সীরা, যা ফেসবুকের মোট ব্যবহারকারীর প্রায় ৩০ শতাংশ।
একসময় তরুণদের প্লাটফর্ম হিসেবে পরিচিত এই মাধ্যমগুলো এখন প্রবীণদের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সহজ প্রযুক্তি ব্যবহার এবং পরিবারের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রয়োজনীয়তা থেকে অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিও ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন প্লাটফর্ম ব্যবহার করছেন নিয়মিত।
তবে এই বিপুল ব্যবহারের পেছনে যেমন ইতিবাচক দিক রয়েছে, তেমনি রয়েছে বড় ধরনের সামাজিক ও মানসিক চ্যালেঞ্জ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারসাম্য বজায় রেখে প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।