বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

১৬০০ কোটি পাসওয়ার্ড ফাঁস, ফেসবুক গুগলসহ একাধিক পরিষেবা ঝুঁকিতে

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : জুন ২১, ২০২৫, ০৩:১৮ পিএম

১৬০০ কোটি পাসওয়ার্ড ফাঁস, ফেসবুক গুগলসহ একাধিক পরিষেবা ঝুঁকিতে

সাইবার নিরাপত্তার ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে বিশ্ব। সম্প্রতি অনলাইনে ফাঁস হয়েছে প্রায় ১৬ বিলিয়ন (১,৬০০ কোটি) পাসওয়ার্ড, যা বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষায় বড় ধরনের হুমকি তৈরি করেছে।

সাইবারনিউজ ও ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, ফাঁস হওয়া এই বিশাল ডেটাসেট শুধু পুরনো তথ্য নয়, বরং বেশির ভাগই নতুন এবং সংগঠিতভাবে চুরি করা হয়েছে ইনফোস্টিলার নামক ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে। এই ধরনের ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর ডিভাইসে গোপনে প্রবেশ করে ইউজারনেম, পাসওয়ার্ডসহ নানা সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করে হ্যাকারদের কাছে পাঠিয়ে দেয়।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই তথ্য ফাঁস এতটাই সুপরিকল্পিত এবং পেশাদারভাবে ঘটানো হয়েছে যে এটিকে একটি সাধারণ সাইবার হামলা না বলে "গ্লোবাল সাইবার অপরাধের ব্লুপ্রিন্ট" বলা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ৩০টি বড় ডেটাসেট একত্রিত করে এই বিপুল সংখ্যক পাসওয়ার্ড ফাঁস করা হয়েছে।

ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে—গুগল, ফেসবুক, টেলিগ্রাম, গিটহাবসহ অনেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ডেভেলপার প্ল্যাটফর্মের লগইন ডেটা, এমনকি কিছু সরকারি পোর্টালের তথ্যও। এই তথ্যগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন হ্যাকাররা সহজেই তা ব্যবহার করতে পারে—ওয়েবসাইট লিংক, ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড একত্রে দেওয়া রয়েছে।

এ ঘটনায় নতুন করে শঙ্কায় রয়েছে ব্যক্তি ব্যবহারকারী থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো। ডার্ক ওয়েবের সহজলভ্যতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। কম প্রযুক্তিগত জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি কিংবা সামান্য অর্থ খরচ করেও এখন এই ডেটাগুলো কিনে ফেলতে পারছে, যা বিপজ্জনক প্রবণতা।

প্রতিরোধে করণীয় হিসেবে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন: জরুরি ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সব অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা, শক্তিশালী ও আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা, টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) চালু করা, ভালো মানের পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করা, ডার্ক ওয়েব মনিটরিং টুল দিয়ে নিজের তথ্য ফাঁস হয়েছে কিনা তা যাচাই করা।

গুগল ইতিমধ্যেই সাধারণ পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে পাসকি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। একইসঙ্গে এফবিআই নাগরিকদের ই-মেইল বা এসএমএসে আসা সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক না করার আহ্বান জানিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিপুল তথ্য ফাঁসের ঘটনা ভবিষ্যতের সাইবার ঝুঁকির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এবং এখনই সচেতন না হলে এর ভয়াবহ প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর।

Link copied!