প্রকাশিত: : মার্চ ৬, ২০২৫, ০২:২৭ পিএম
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রভাব কমে যাওয়ায় বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে (জিটিআই) তিন ধাপ উন্নতি করেছে বাংলাদেশ।
ছবি: গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স ২০২৫
বুধবার (৫ মার্চ) অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস (আইইপি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৫তম। এর আগে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩২তম।
আইইপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের সূচকে বাংলাদেশের স্কোর তিন দশমিক শূন্য তিন (৩.০৩)। শূন্য থেকে ১০ স্কোরের এই সূচকে শূন্য স্কোর পাওয়ার অর্থ হলো দেশটিতে সন্ত্রাসবাদের কোনও প্রভাব নেই।
অন্যদিকে, ১০ স্কোর পাওয়ার অর্থ হলো সন্ত্রাসবাদের সর্বোচ্চ প্রভাব রয়েছে। বাংলাদেশের স্কোর আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে, যা দেশটিতে সন্ত্রাসবাদের প্রভাব হ্রাসের ইঙ্গিত দেয়।
ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস (আইইপি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের প্রভাব কম। ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলকভাবে ভালো। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে খারাপ অবস্থান পাকিস্তানের, দেশটির স্কোর ৮.৩৭৪। পাকিস্তানের পরই রয়েছে আফগানিস্তান (স্কোর ৭.২৬২) এবং ভারত (স্কোর ৬.৪১১)।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভুটান ও শ্রীলঙ্কা সন্ত্রাসবাদের প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। গত পাঁচ বছরে এই দুই দেশে কোনও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া নেপালও সন্ত্রাসবাদের প্রভাবে তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে।
বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের প্রভাব এখনও উদ্বেগজনক জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে বিশ্বের ৬৬টি দেশে অন্তত একটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছরের চেয়ে বেশি। গত সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সন্ত্রাসবাদের অবনতি ঘটেছে ৪৫টি দেশে, যেখানে উন্নতি হয়েছে মাত্র ৩৪টি দেশে।
আইইপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের সূচকে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বুরকিনা ফাসো। বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের কারণে যত প্রাণহানি ঘটেছে, তার এক-পঞ্চমাংশই এই দেশে ঘটেছে। এরপরই রয়েছে পাকিস্তান ও সিরিয়া।
এ বিষয়ে আইইপি সতর্ক করে বলেছে, সন্ত্রাসবাদ এখনও বৈশ্বিক হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে। গত বছর বিশ্বে চারটি প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাদের সহিংসতা তীব্র করেছে, যার ফলে প্রাণহানির সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়া গত এক দশক ধরে সন্ত্রাসবাদের শীর্ষ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত হলেও এই অঞ্চলের বেশিরভাগ দেশেই উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হ্রাস পাওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক স্কোর কিছুটা উন্নত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচক ২০১২ সাল থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে। বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা, হামলায় নিহত ও আহতের সংখ্যা এবং সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হওয়ার পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এই সূচক তৈরি করা হয়।