বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

বিশ্বব্যাপী পিৎজার বাজার ১৫০ বিলিয়ন ডলারের

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ০৫:৪০ পিএম

পিৎজার হাজার বছরের পথচলা—দরিদ্রের রুটি থেকে আধুনিক ফাস্ট-ফুড সাম্রাজ্য। নেপলসের গলির চুলা থেকে শুরু করে বিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক শিল্প—স্বাদ, সংস্কৃতি ও ব্যবসার এক রোমাঞ্চকর ইতিহাস।

বিশ্বব্যাপী পিৎজার বাজার ১৫০ বিলিয়ন ডলারের

একসময় গরিব মানুষের থালায় থাকা এক টুকরো রুটি আর সামান্য টপিং, আজ তা বিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক শিল্প। যে খাবার একদিন সমাজের অভিজাত অংশের কাছে ছিল প্রায় অচ্ছুত, শহরের অলিগলিতে সেই পিৎজার জনপ্রিয়তা আজ আকাশছোঁয়া। শুধু তাই নয়, বহু মানুষের কাছে পিৎজা আজ বিলাসী উপাদেয় খাবার। এতে প্রমাণ হয়, পিৎজার ইতিহাস ও বিবর্তন বেশ আকর্ষণীয় ও বহুস্তরবিশিষ্ট। পিৎজার এ যাত্রা শুধু খাবারের ইতিহাস নয়, এটি অভিবাসন, প্রযুক্তি, পুঁজির বিস্তার ও আধুনিক ভোক্তা সংস্কৃতিরও এক অনন্য দলিল।

ধারণা করা হয়, পিৎজার যাত্রা শুরু হয়েছিল দক্ষিণ ইতালির গায়েতা অঞ্চলে, খ্রিস্টপূর্ব ৯৯৭ সালের দিকে। শুরুতে প্রবাসীরাই ছিল পিৎজার বড় ভক্ত। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ চিত্র বদলাতে থাকে। ইতালিতে অবস্থানরত মিত্রবাহিনীর সেনারা পিৎজা খেতে ভালোবাসতেন, তারাই একে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় করে তোলায় বড় ভূমিকা রাখেন।

পিৎজার বিশ্বভ্রমণ শুরু হয় অভিবাসনের স্রোতে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ ও বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ইতালীয় অভিবাসীরা যখন আমেরিকা ও ইউরোপের নানা দেশে পাড়ি জমাতে শুরু করেন, তাদের হাত ধরেই পিৎজা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে।

১৯৫০-এর দশকে আমেরিকান করপোরেট দুনিয়া পিৎজার বাণিজ্য সম্ভাবনা টের পায়। মোটা ক্রাস্ট, ডিপ-প্যান পিৎজা তখন নতুন এক ধারার জন্ম দেয়। এরপর আশির দশকে আসে ‘ক্যালিফোর্নিয়া স্টাইল’ গুরমে পিৎজা, পাতলা ক্রাস্ট, ক্রিম ফ্রেশ থেকে শুরু করে ক্যাভিয়ার পর্যন্ত বিলাসী টপিংস। পিৎজা তখন শুধু খাবার নয়, হয়ে ওঠে একধরনের জীবনধারা।

পিৎজা শিল্প: স্বাদ থেকে পুঁজির অংক

খাদ্যসেবা খাতের খুব কম অংশই পিৎজা চেইনের মতো এমন বিশাল পরিসর, স্থায়িত্ব ও ভোক্তার আনুগত্য অর্জন করতে পেরেছে। ডেলিভারি-নির্ভর ব্যবসায়িক মডেল, সুশৃঙ্খল পরিচালনা আর ফ্র্যাঞ্চাইজ-বান্ধব কাঠামো এ শিল্পকে রেস্তোরাঁ দুনিয়ার সবচেয়ে সংগঠিত খাতগুলোর একটিতে পরিণত করেছে।

২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী পিৎজার বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১৫০ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫-৩৫ সালের মধ্যে গড়ে ২ দশমিক ৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি পেয়ে এ বাজার ১৫৪ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে।

যদিও মোট আউটলেটের ৪০-৬০ শতাংশ এখনো স্বাধীন পিৎজারিয়াদের দখলে, তবে আয়ের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে কয়েকটি জায়ান্ট চেইন ডোমিনোজ, পিৎজা হাট, লিটল সিজারস, পাপা জন’স ও মারকো’স পিৎজার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০২৪ সালে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই চেইন পরিচালিত পিৎজা রেস্তোরাঁগুলোর বার্ষিক আয় পৌঁছায় প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারে। সারা দেশে তখন এসব প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৭৫ হাজারেরও বেশি।

ডোমিনোজ পিৎজা: দ্রুততার সাম্রাজ্য

ডোমিনোজের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬০ সালে ইস্টার্ন মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ইপসিলান্টিতে। টম ও জেমস মোনাহান দুই ভাই ‘ডোমিনিক্স’ নামের ছোট একটি পিৎজেরিয়া কিনেছিলেন।

টম দোকানটি কেনার জন্য ৫০০ ডলার ধার নেন, ঋণ নিয়ে শুরু করা সেই দোকান থেকেই জন্ম নেয় ডোমিনোজের সাম্রাজ্য। টম মোনাহান দ্রুতই বুঝে যান, পিৎজার ভবিষ্যৎ ডেলিভারিতে। তাই বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার শ্রমিকদের ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ করে দ্রুত ডেলিভারির ওপর জোর দেন।

১৯৬১ সালে জেমস তার একটি শেয়ার ভক্সওয়াগেন বিটলের সঙ্গে বিনিময় করেন, ফলে টম তখন একমাত্র মালিক বনে যান। ১৯৬৫ সালের মধ্যে টম আরো দুটি স্থানে আউটলেট খোলার পর ডোমিনিকের মালিকের সঙ্গে নামকরণের বিরোধের কারণে ব্যবসার নাম পরিবর্তন করে রাখেন ডোমিনোজ পিৎজা, ইনক.। ডোমিনোজ নামটি এসেছিল এক কর্মচারী জিম কেনেডির কাছ থেকে। ১৯৬৭ সালে চালু হয় প্রথম ফ্র্যাঞ্চাইজি। মাঝখানে অগ্নিকাণ্ড, ট্রেডমার্ক মামলা, নিরাপত্তা ঝুঁকির অভিযোগ সবই এসেছে, কিন্তু ডোমিনোজ থেমে থাকেনি। অনলাইন অর্ডার, পিৎজা ট্র্যাকার, বিশেষ ডেলিভারি যান ডিএক্সপি প্রযুক্তি ব্যবহারে তারা ছিল পথিকৃৎ।

আজ ডোমিনোজ বিশ্বের বৃহত্তম পিৎজা চেইন। বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে প্রায় ২০ হাজার শাখা। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ৬ হাজার ৮৫৪টি শাখা রয়েছে। ডোমিনোজের বার্ষিক বিক্রয় আয় ৯ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার।

পিৎজা হাট: লাল ছাদের উত্তরাধিকার

১৯৫৮ সালের ৩১ মে, কানসাসের উইচিটা শহরে ড্যান ও ফ্র্যাঙ্ক কার্নি দুই ভাই মায়ের কাছ থেকে ৬০০ ডলার ধার করে ৫০৩ সাউথ ব্লাফে খুলেছিলেন ৬০০ বর্গফুটের একটি ছোট দোকান। দোকানের গঠন দেখে সেটির নাম দেয়া হয়েছিল পিৎজা হাট।

মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরির জন্য উদ্বোধনী রাতে তারা বিনামূল্যে পিৎজা দেয়, যা সত্যিই গ্রাহকের মন জয় করে। পিৎজার রেসিপি দিয়েছিল তাদের আরেক অংশীদার জন বেন্ডার।

পিৎজা হাট এক বছরের মধ্যে ছয়টি আউটলেটে সম্প্রসারণ হয় এবং ১৯৫৯ সালে টোপেকায় প্রথম ইউনিটের সঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজিং করে। ১৯৬৬ সালে মাত্র আট বছরের মধ্যে ১৪৫টি ইউনিট নিয়ে উইচিটা হোম অফিস প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আইকনিক লাল ছাদের ভবনের নকশা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে।

১৯৮৬ সালের মধ্যে পিৎজা হাট পাঁচ হাজার ইউনিটে পৌঁছে যায়, স্টিভেন রেইনমুন্ডের মতো নেতাদের অধীনে ব্যবসা দ্রুত বাড়ার জন্য ডেলিভারি পরিষেবা চালু করে। পেপসিকো ১৯৭৭ সালে এ চেইন অধিগ্রহণ করে। ২০০২ সালে এটিকে ট্রাইকন গ্লোবাল রেস্তোরাঁয় রূপান্তর করা হয়। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই পিৎজা হাটের রয়েছে ৬ হাজার ৫৯৩টি শাখা। বিশ্বব্যাপী ৯০টি দেশে ১৯ হাজারের কাছাকাছি শাখা নিয়ে এখনো শক্ত অবস্থানে আছে, যার বার্ষিক আয় ৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার।

লিটল সিজারস: স্বল্পমূল্যের দর্শন

১৯৫৯ সালে মিশিগানের গার্ডেন সিটিতে মাইক ও মারিয়ান ইলিচ দম্পতির হাতে জন্ম নেয় লিটল সিজারস। মাইক ইলিচ ছিলেন একজন সাবেক মেরিনার এবং মাইনর লিগ বেসবল খেলোয়াড়, আঘাতের কারণে যাকে সাইডলাইন করে দেয়া হয়েছিল। এ দম্পতি তাদের জীবনের সব সঞ্চয় ব্যবহার করে একটি স্ট্রিপ মলে প্রথম ‘লিটল সিজার্স পিৎজা ট্রিট’ খুলেছিল। শুরুতে সেখানে শুধু পিৎজা নয়, বিক্রি হতো হটডগ, মাছ, চিংড়ি, স্প্যাগেটিও।

নামটি স্পার্টাকাস চলচ্চিত্র ও ব্র্যান্ডিংয়ের ওপর আপস থেকে এসেছে, তারা কম দামে উচ্চ গ্লুটেন ময়দা ও প্রাকৃতিক মসলার মতো মানসম্পন্ন উপাদানের ওপর জোর দিয়ে প্রথম সপ্তাহে বিক্রি করেছিল ২৯৬টি পিৎজা।

প্রথম ফ্র্যাঞ্চাইজিটি খোলা হয় ১৯৬২ সালে মিশিগানের ওয়ারেনে। ১৯৬৯ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এর ৫০টি শাখা হয়, যার মধ্যে কানাডায় প্রবেশও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৭১ সালে শুধু ক্যারি-আউট মডেলে রূপান্তরের পর কার্যক্রম আরো দ্রুত হয়। ১৯৯০-এর দশকের মধ্যে এটি ডোমিনো’জ ও পিৎজা হাটের পরে তৃতীয় বৃহত্তম মার্কিন পিৎজা চেইন হয়ে ওঠে।

এখন বিশ্বব্যাপী পারিবারিক মালিকানাধীন ইলিচ হোল্ডিংসের অধীনে ৫ হাজার ৫০০টি শাখা রয়েছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই রয়েছে এর ৪ হাজার ২১৭টি শাখা। লিটল সিজারসের বার্ষিক আয় ৪ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। এর মূল শক্তি তাদের ‘হট-এন-রেডি’ দর্শন, কম দামে দ্রুত পিৎজা।

পাপা জন’স: উন্নত উপকরণের প্রতিশ্রুতি

১৯৮৪ সালে ইন্ডিয়ানার জেফারসনভিলে জন হ্যাম্পটন বাবার ট্যাভার্নের ঝাড়ু রাখার আলমারিটিকে একটি পিৎজারিয়ায় রূপান্তর করেছিলেন।

পিৎজা সরঞ্জাম কিনতে তার ১৯৭১ শেভ্রোলেট ক্যামারো জেড২৮ (1971 Chevrolet Camaro Z28) ১ হাজার ৬০০ ডলারে বিক্রি করেছিলেন এবং ট্যাভার্ন গ্রাহকদের কাছে তার উচ্চমানের পাই বিক্রি শুরু করেছিলেন, যা তৈরিতে তিনি তাজা উপাদানের ওপর জোর দিয়েছিলেন। ফলে জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়তে থাকে এবং এক বছরের মধ্যে কাছাকাছি জায়গায় এর সম্প্রসারণ ঘটে। ১৯৯৩ সালে শেয়ারবাজারে এটি যাত্রা শুরু করে ১৯৯৪ সালের মধ্যে ৫০০টি এবং ১৯৯৭ সালের মধ্যে ১ হাজার ৫০০টিরও বেশি আউটলেট খোলে।

নিজের ক্যামারো গাড়ি বিক্রি করে যন্ত্রপাতি কেনা সেই তরুণ উদ্যোক্তার স্বপ্ন আজ ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ৩৪টির বেশি দেশে তাদের ছয় হাজারের কাছাকাছি শাখা নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। পাপা জন’সের বার্ষিক আয় ৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।

মার্কো’স পিৎজা: অভিবাসীর স্বপ্নের নতুন অধ্যায়

১৯৭৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ওহাইওর ওরেগনে ইতালীয় অভিবাসী পাসকোয়েল প্যাট গিয়ামারকোর (Pasquale “Pat” Giammarco) হাতে জন্ম নেয় মার্কো’স পিৎজা।

ইতালির সালমোনায় জন্মগ্রহণকারী প্যাট গিয়ামারকো নয় বছর বয়সে চলে আসেন যুক্তরাষ্ট্রে। মিশিগানের ডিয়ারবর্নে তিনি বেড়ে ওঠেন। পারিবারিক পিৎজারিয়ায় কাজ করতে করতেই তৈরি করেন তার সিগনেচার সস, যা আজও এ ব্র্যান্ডের পরিচয়।

উত্তর-পশ্চিম ওহাইওর মধ্য দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় তিনি খাঁটি ইতালীয় পিৎজার অভাব দেখেন এবং স্টার অ্যাভিনিউতে প্রথম আউটলেটটি খোলেন। স্ক্র্যাচ মেড ডোহ ও তিনটি সিগনেচার পনিরের মতো তাজা উপাদানের ওপর তিনি জোর দেন।

জাতীয় পর্যায়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিং শুরু হয় ২০০২ সালে। ২০২৫ সালের মধ্যে মার্কো’স পিৎজা ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫টি অঙ্গরাজ্য, পুয়ের্তো রিকো, বাহামাস ও মেক্সিকোয়। যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজার ১৬২ ও বিশ্বব্যাপী ৬৬টি শাখা রয়েছে। বর্তমানে এটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহত্তম পিৎজা চেইন, যার বার্ষিক আয় ১ দশমিক শূন্য ৪১ বিলিয়ন ডলার।

ইতিহাসের পুরনো চুলা: নেপলসের ঐতিহ্যবাহী পিৎজারিয়া

বিশ্বের প্রথম পিৎজারিয়া হিসেবে ধরা হয় নেপলসের আন্তিকা পিৎজারিয়া পোর্ট’ আলবাকে, যার যাত্রা ১৭৩৮ সালে। এখানকার ‘মাস্তুনিকোলা’ আজও প্রাচীন স্বাদের জীবন্ত নিদর্শন। মজার ব্যাপার, গ্রাহকরা খাবার খেয়ে আটদিন পর টাকা পরিশোধ করতে পারতেন। এ প্রথার নাম ছিল ‘পিৎজা আ অত্তো’।

১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত ল’আন্টিকা পিৎজারিয়া দা মিকেলে আজও শুধু দুটি পিৎজা বানায়—মার্গারিটা ও মারিনারা। ১৮৯২ সালের লম্বার্ডির পিৎজারিয়া নেপলস থেকে নিউইয়র্কে গিয়ে ১৯০৫ সালে আমেরিকার প্রথম পিৎজারিয়া হিসেবে ইতিহাস গড়ে তোলে। নিউইয়র্ক স্টাইল পিৎজার জন্মও সেখানেই।

পিৎজা যত দেশ বদলেছে, তত বদলেছে তার পোশাক। কোরিয়ায় কিমচি টপিং, ভারতে চিকেন টিক্কা, জাপানে মেয়নেজ-ভিত্তিক ভিন্নধর্মী স্বাদ। আবার মিষ্টি পিৎজা চকলেট, নুটেলা, ফল আর মধুর টপিং, ডেজার্টের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এ অভিযোজন ক্ষমতাই হয়তো পিৎজাকে বিশ্বজয়ের পথে নিয়ে গেছে।

পিৎজার এ দীর্ঘ যাত্রাপথে স্পষ্ট হয় একটি সত্য। তা হলো সফলতা শুধু দাম বা দোকানের সংখ্যা দিয়ে আসে না, আসে ধারাবাহিকতার সঙ্গে নতুনত্বের ভারসাম্য থেকে। স্থানীয় স্বাদের সঙ্গে বৈশ্বিক ব্যবসায়িক মডেলের মেলবন্ধন, প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ, আর ভোক্তার অভ্যাস বোঝার ক্ষমতাই আজকের পিৎজা সাম্রাজ্যের মূল শক্তি।

নেপলসের গলির আগুনে পোড়া সে সরল রুটির টুকরো আজ যে বৈশ্বিক অর্থনীতির অংশ, এটি কেবল খাবারের গল্প নয়, এটি মানুষের অভিযোজন, স্বপ্ন আর পুঁজি বিস্তারের এক দীর্ঘ ও সুগন্ধি ইতিহাস। এ ইতিহাসের চুলা এখনো জ্বলছে নতুন স্বাদ, নতুন বাজার আর নতুন সম্ভাবনার উত্তাপে।

Link copied!