প্রকাশিত: : জুন ১৯, ২০২৫, ০৪:১৪ পিএম
বায়ুদূষণ যুক্তরাজ্যে ভয়াবহ জনস্বাস্থ্য সংকটে পরিণত হয়েছে। রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস (RCP) জানিয়েছে, দূষিত বাতাসে প্রতি সপ্তাহে ৫০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এবং এর ফলে স্বাস্থ্য খাতে ও অর্থনীতিতে বিশাল ক্ষতি হচ্ছে।
চিকিৎসকদের ভাষায়, দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষই এখন বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে, যা শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গকে প্রভাবিত করছে।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে বায়ুদূষণের কারণে বছরে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ অকালমৃত্যুর শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্যঝুঁকি, চিকিৎসা খরচ ও কর্মক্ষমতা হ্রাসের কারণে আর্থিক ক্ষতি বছরে প্রায় ২৭ বিলিয়ন পাউন্ড। কিন্তু ডিমেনশিয়া ও মানসিক স্বাস্থ্যের মতো দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব যোগ করলে এই ক্ষতির পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন পাউন্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আরসিপি বলছে, বায়ুদূষণ ভ্রূণের স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার এবং মানসিক সমস্যা বাড়ায়। একজন মানুষের গড় আয়ু প্রায় ১.৮ বছর পর্যন্ত কমে যেতে পারে, যা ধূমপান বা ক্যানসারের মতোই মারাত্মক ঝুঁকি।
ইংল্যান্ডের চিফ মেডিকেল অফিসার প্রফেসর ক্রিস হুইটি বলেন, “বায়ুদূষণ হলো আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে বড় পরিবেশগত হুমকি, যা জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে প্রভাব ফেলছে।” তিনি আরও জানান, যদিও গত ৩০ বছরে কিছু দূষণ কমেছে, তবুও এটি এখনো অসুস্থতা ও অকাল মৃত্যুর একটি বড় কারণ।
আরসিপির প্রেসিডেন্ট ডা. মুমতাজ প্যাটেল মন্তব্য করেন, “এটি কেবল পরিবেশগত সমস্যা নয়, এখন এটি একটি বড় জনস্বাস্থ্য সংকট। প্রতিরোধযোগ্য হাজার হাজার মৃত্যু আমরা প্রতি বছর দেখতে পাচ্ছি—যার দায় কেউ নিতে চায় না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি অন্য কোনো কারণে বছরে ৩০ হাজার প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুকে মেনে না নেই, তাহলে পরিষ্কার বাতাসের নিরাপত্তাকেও নিরাপদ পানি বা খাদ্যের মতো মৌলিক অধিকার হিসেবে দেখতে হবে।”
RCP সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, বায়ুদূষণকে এখনই জাতীয় জনস্বাস্থ্য ইস্যু হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে।