শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ ৬০ হাজার কোটি টাকা

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : জুন ১, ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম

ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ ৬০ হাজার কোটি টাকা

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস ২১ দিনে ব্যাংক খাত থেকে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা নিট ঋণ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, এ ঋণের পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা কম।

গত অর্থবছরের ১১ মাসে সরকারের নিট ব্যাংক ঋণ ছিল ৬৮ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। তবে চলতি অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ঋণের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। পরে অন্তর্বর্তী সরকার তা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকা করে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, বাস্তবতার আলোকে ঋণ সীমিত রেখে ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, এই সময়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকার ১ লাখ ১৪ হাজার ২০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এর বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধার বাবদ ৫৪ হাজার ১০৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। ফলে নিট ঋণের পরিমাণ কমেছে।

সরকার চলতি অর্থবছরের শেষে ব্যয় সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা কমাতে যাচ্ছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৫ শতাংশ কমিয়ে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন বাজেটের আকারও তুলনামূলকভাবে ছোট হচ্ছে। আগামীকাল (সোমবার) উপস্থাপন হতে যাওয়া বাজেটে সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে, যা চলতি বছরের বাজেট থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা কম।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কিংবা টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করা উচিত নয়। আগামী বাজেটটি বাস্তবভিত্তিক হবে।”

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ পরিশোধ ও সুদের চাপ অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে বেতন-ভাতা, সুদ ও অন্যান্য পরিচালন ব্যয় প্রতিবছরই বাড়ছে। আগামী অর্থবছরে সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা।

সরকার পূর্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরাসরি ঋণ নিত। তবে মূল্যস্ফীতির চাপ বৃদ্ধির কারণে এ পন্থা থেকে সরে এসে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকেই অধিকাংশ ঋণ নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ বন্ধ করায় সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর দিকেই ঝুঁকেছে। অথচ উচ্চ সুদ ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বেসরকারি খাত ঋণ নিতে আগ্রহী নয়, ফলে সরকারের বিকল্প নেই।”

Link copied!