সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

আলোচিত সাত খুনের ১১ বছর, এখনও রায় বাস্তবায়নের অপেক্ষায় স্বজনরা

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : এপ্রিল ২৭, ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম

আলোচিত সাত খুনের ১১ বছর, এখনও রায় বাস্তবায়নের অপেক্ষায় স্বজনরা

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ১১ বছর পার হলেও এখনও রায় কার্যকর হয়নি। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকা থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। পরে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়। ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। পরে উচ্চ আদালতে আপিলের পর ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট হাইকোর্ট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১১ জনের যাবজ্জীবন ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখেন। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চূড়ান্ত শুনানি ও রায় কার্যকরের অপেক্ষায় আছে মামলাটি।

রায় কার্যকর না হওয়ায় হতাশ নিহতদের স্বজনরা। স্বামী হারিয়ে একাই মেয়েকে বড় করছেন নিহত গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী নূপুর। তিনি বলেন, এখন আর কেউ খবর রাখে না, সবাই প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে। প্রতিবছর কেবল সাংবাদিকরা খোঁজ নেন, কিন্তু বাস্তবে কীভাবে বেঁচে আছেন, তা জানেন শুধু তিনি ও তার মেয়ে রোজা। বাবার মৃত্যুর এক মাস পর জন্ম নেওয়া রোজা এখন মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। তার কাছে বাবা মানে কেবল একটি ছবিতে বাঁধানো স্মৃতি।

নূপুরের মতো অন্যান্য নিহতদের পরিবারগুলোর অবস্থাও একই। স্বজন হারানোর ব্যথার পাশাপাশি তারা অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছেন। অনেকেই এখনও ঘাতক নূর হোসেনের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও রায় কার্যকর হয়নি। তিনি দ্রুত রায় বাস্তবায়নের দাবি জানান এবং জানান, এখনও নূর হোসেনের লোকজনের কাছ থেকে হুমকি পাচ্ছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, তারা আশা করেন, নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের রায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বহাল রাখবে এবং দ্রুত শুনানি ও নিষ্পত্তির মাধ্যমে রায় কার্যকর করা হবে।

Link copied!