সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের জন্য ৫৯৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : এপ্রিল ২৭, ২০২৫, ০১:৩০ পিএম

বর্তমানে জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতরা কোনো মাসিক সম্মানী পান না। চলতি অর্থবছরে এ খাতে কোনো বরাদ্দও নেই।

জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের জন্য ৫৯৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার

আগামী অর্থবছরের বাজেটে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও আহতদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ৫৯৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এর মধ্যে শহিদ পরিবার ও আহতদের মাসিক সম্মানী ভাতার জন্য ২০৬.৬২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে এবং বাকি অর্থ এককালীন সহায়তা অনুদান হিসেবে প্রদান করা হবে।

শহিদ পরিবার ও গুরুতর আহত (এ ক্যাটাগরি) ব্যক্তিরা প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা পাবেন। বি ক্যাটাগরির আহতরা মাসে ১৫ হাজার টাকা এবং সি ক্যাটাগরির আহতরা মাসে ১০ হাজার টাকা করে পাবেন।

বর্তমানে জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদ ও আহতদের জন্য কোনো মাসিক সম্মানী চালু নেই এবং চলতি অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে কোনো বরাদ্দও রাখা হয়নি। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এখন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন।

ফেব্রুয়ারিতে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম ঘোষণা দিয়েছিলেন, আগামী অর্থবছর থেকে জুলাই অভ্যুত্থানের আহতদের মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়া হবে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছরে শহিদ পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা করে এককালীন অনুদান এবং আহতদের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্য মোট ৬৩৭.৮০ কোটি টাকা চেয়েছিল। এর মধ্যে ডিসেম্বর মাসে ২৩২.৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং বাকিটা আগামী অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই সময় নির্দেশনা দেওয়া হয়, এ অর্থ এককালীন অনুদান হিসেবেই ব্যবহার করতে হবে।

পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এককালীন অনুদানের পাশাপাশি মাসিক সম্মানীও দেওয়া হবে নগদ সামাজিক সহায়তার আওতায়।

এর ধারাবাহিকতায় গত ২৩ এপ্রিল ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ৫৯৩.২১ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও অর্থ সচিবের কাছে।

কর্মকর্তারা জানান, গেজেটভুক্ত শহিদ পরিবারের সংখ্যা ৮৩৪। চলতি অর্থবছরে ৮২৬ পরিবারের জন্য ১০ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৮টি পরিবারের জন্য অতিরিক্ত ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন।

আগামী বাজেটে গেজেটভুক্ত প্রত্যেক শহিদ পরিবারকে অতিরিক্ত ২০ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়ার জন্য ১৬৬.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

জুলাই অভ্যুত্থানে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত আহতদের মধ্যে এ ক্যাটাগরিতে ৪৯৩ জন, বি ক্যাটাগরিতে ৯০৮ জন এবং সি ক্যাটাগরিতে ১০ হাজার ৬৪২ জন আছেন। ডি ক্যাটাগরিতে ছাত্র-জনতার সংখ্যা সাত হাজার। এছাড়া ২ হাজার ৪১৬ জন আহতের ক্যাটাগরিভিত্তিক তালিকা এখনো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে নেই।

চলতি অর্থবছরে এ ক্যাটাগরিভুক্তদের ২ লাখ টাকা, বি ও সি ক্যাটাগরির আহতদের ১ লাখ টাকা এবং ডি ক্যাটাগরির জন্য ৫০ হাজার টাকা করে চিকিৎসা সহায়তা বাবদ ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। পাশাপাশি দেশে-বিদেশে চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২৫ কোটি টাকা।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আহতদের জন্য অনুদান বাবদ ১৩৯.৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। এখানে এ ক্যাটাগরিভুক্তরা ৩ লাখ টাকা, বি ক্যাটাগরিভুক্তরা ২ লাখ টাকা এবং সি ক্যাটাগরিভুক্তরা ১ লাখ টাকা করে পাবেন।

আগামী অর্থবছরে শহিদ পরিবার ও এ ক্যাটাগরির আহতদের জন্য মাসিক সম্মানী বাবদ ৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বি ক্যাটাগরির আহতদের সম্মানীর জন্য ১৬.৩৪ কোটি টাকা এবং সি ক্যাটাগরির আহতদের সম্মানীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১২৭.৭০ কোটি টাকা।

ক্যাটাগরিভুক্তির বাইরে থাকা ২ হাজার ৪১৬ জন ছাত্র-জনতার মধ্যে অর্ধেককে এ ক্যাটাগরিতে এবং বাকিদের বি ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করে যথাক্রমে ৩ লাখ ও ২ লাখ টাকা হারে অনুদান দেওয়া হবে, যার জন্য ৬০.৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এছাড়া এ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্তদের মাসিক সম্মানী বাবদ অতিরিক্ত ৫০.৭৩ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

Link copied!