রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫

কেউ কোনোদিন দেখেনি এমন রং আবিষ্কারের দাবি বিজ্ঞানীদের

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ০৩:৪৫ পিএম

প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে গবেষকরা চোখের দেখার সীমার বাইরে এক রঙের অভিজ্ঞতা পান, যেটিকে তারা বলছেন ‘অত্যন্ত স্যাচুরেটেড ব্লু-গ্রিন’ বা তীব্র নীলাভ সবুজ। কিন্তু সেই বর্ণনাও নাকি যথেষ্ট নয়!

কেউ কোনোদিন দেখেনি এমন রং আবিষ্কারের দাবি বিজ্ঞানীদের

বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, তারা এমন এক রঙের সন্ধান পেয়েছেন, যা আগে কেউ কোনোদিন চোখে দেখেনি। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলির একদল গবেষক ‘ওলো’ নামে এই রঙের অভিজ্ঞতা পেয়েছেন। তবে সাধারণভাবে এই রং দেখা সম্ভব নয়। অত্যাধুনিক লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরাসরি চোখের রেটিনার নির্দিষ্ট কোষে আলো পাঠিয়ে এই রঙের অনুভব তৈরি করা হয়।

আমাদের চোখে সাধারণত তিন ধরনের কন কোষ থাকে — এস, এম ও এল, যারা আলোর ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের প্রতি সাড়া দেয়। কিন্তু প্রকৃতিতে এমন কোনো আলো নেই, যা শুধু ‘এম কন’ কোষকে সক্রিয় করে। এই সীমাবদ্ধতা ভেঙেই গবেষকরা তাদের লেজার প্রযুক্তির মাধ্যমে একেবারে নতুন রঙের অনুভব পেয়েছেন, যাকে তারা বলছেন ‘অত্যন্ত স্যাচুরেটেড ব্লু-গ্রিন’ বা তীব্র নীলাভ সবুজ। তবে গবেষকদের মতে, এভাবেও আসল রঙের অনুভূতি বোঝানো সম্ভব নয়।

গবেষক অস্টিন রুরডা জানান, এই রং কোনো স্ক্রিন বা কাগজে দেখানো যাবে না। আমাদের চোখে যা দেখা সম্ভব, এটা তার ছায়ামাত্র। আসল অভিজ্ঞতা অনেক বেশি তীব্র ও বিস্ময়কর। আর গবেষক রেন এনজি বললেন, তারা জানতেন এটা ব্যতিক্রম কিছু হবে। তবে মস্তিষ্ক সেটাকে কীভাবে নেবে, সেটা ছিল সম্পূর্ণ অজানা। যখন সেই অভিজ্ঞতা এলো, সবাই চমকে উঠেছিলেন।

‘ওলো’ নামটি নেওয়া হয়েছে বাইনারি কোড ০১০ থেকে, কারণ ওই সময় শুধু এম কন কোষই সক্রিয় ছিল। যদিও যুক্তরাজ্যের দৃষ্টিবিজ্ঞানী জন বারবার এই আবিষ্কার নিয়ে কিছুটা সংশয় প্রকাশ করেছেন। তার মতে, এটি আদতে নতুন কোনো রঙ নয়। বরং এমন এক ধরনের ঘন সবুজ, যা স্বাভাবিকভাবে তৈরি করা সম্ভব হয় না। ফলে এর গুরুত্বও সীমিত।

তবু বার্কলির গবেষকরা এই ‘ওজ ভিশন’ প্রযুক্তিকে শুধুমাত্র রঙ নিয়ে গবেষণার উপকরণ হিসেবে দেখছেন না। ভবিষ্যতে চোখের রোগ, বিশেষ করে রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা কিংবা বর্ণান্ধতা চিকিৎসা ও গবেষণায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও তাদের আশা।

তবে সাধারণ মানুষের পক্ষে খুব দ্রুত এই ‘ওলো’ দেখার সুযোগ আসছে না। রেন এনজি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, এটি একটি মৌলিক গবেষণা। শিগগিরই কোনো স্মার্টফোনের ডিসপ্লে, টেলিভিশন কিংবা ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতেও এই রঙের দেখা পাওয়া যাবে না।

Link copied!