প্রকাশিত: : মে ২৮, ২০২৫, ০৬:২১ পিএম
ছবি: শন হ্যারিস
এলন মাস্কের মহাকাশ স্বপ্নে আবারও ধাক্কা খেল স্পেসএক্সের স্টারশিপ। মঙ্গল গ্রহে মানববসতির লক্ষ্যে তৈরি করা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী রকেটটি ফের বিধ্বস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার ভারতের মহাসাগরের আকাশে শেষ পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চলাকালে স্টারশিপ যান্ত্রিক সমস্যায় পড়ে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের স্টারবেস থেকে উৎক্ষেপণ শুরু হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্যা দেখা দেয়। প্রথম ধাপের ‘সুপার হেভি বুস্টার’ গাল্ফ অব মেক্সিকোতে পরিকল্পিত পানিতে অবতরণের বদলে বিস্ফোরিত হয়। দ্বিতীয় ধাপে স্টারশিপের উপগ্রহবাহী দরজা খুলতে ব্যর্থ হয়, ফলে স্টারলিংক স্যাটেলাইট সিমুলেটর মোতায়েন করা সম্ভব হয়নি।
যদিও রকেটটি আগের তুলনায় অনেক দূর অগ্রসর হয়েছিল, কিন্তু মাঝপথে জ্বালানি ফাঁস হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং ঘূর্ণায়মান অবস্থায় ফিরে এসে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় ভেঙে পড়ে। স্পেসএক্স এই ব্যর্থতাকে আড়াল করে বলেছে, এটি “র্যাপিড আনস্কেডিউলড ডিসঅ্যাসেম্বলি”-র মুখে পড়েছে—অর্থাৎ রকেটটি ধ্বংস হয়েছে।
উৎক্ষেপণের সময় শত শত মহাকাশপ্রেমী সাউথ প্যাড্রে দ্বীপের পার্ক ও আশপাশের নৌকায় জড়ো হয়েছিলেন। তাদের অনেকেই হতাশ হলেও ঘটনাটি ছিল উত্তেজনায় ভরা। দর্শকদের কেউ কেউ বলেন, “বিজ্ঞান কখনো ব্যর্থ হয় না—প্রতিটি পরীক্ষা একটি নতুন শিক্ষার সুযোগ।”
এদিকে, এলন মাস্ক জানিয়েছেন, পরবর্তী তিনটি উৎক্ষেপণ অপেক্ষাকৃত কম সময়ের ব্যবধানে হবে—প্রায় প্রতি তিন থেকে চার সপ্তাহে একটি করে। তবে লাইভ সম্প্রচারে যেভাবে মঙ্গলে যাওয়ার পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছিল, সেটি নিয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করেননি।
উল্লেখ্য, এই উৎক্ষেপণের অনুমতি স্পেসএক্স পেয়েছিল মাত্র চার দিন আগে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (FAA) কাছ থেকে। জানুয়ারি ও মার্চে দুটি পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণও ব্যর্থ হয়েছিল, যার একটি ক্যারিবীয় অঞ্চলে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে দিয়েছিল এবং বাণিজ্যিক ফ্লাইটে বিঘ্ন ঘটায়।
এই ধাক্কা এলন মাস্কের মঙ্গল অভিযানের স্বপ্নে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে যুক্ত হলো, তবে স্পেসএক্স বলছে, প্রতিটি ব্যর্থতা থেকে তারা শিখছে এবং সামনে আরও উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে ফিরে আসবে।