প্রকাশিত: : এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ০১:০৭ পিএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপি কখনো সংস্কারের বিরোধিতা করেনি, বরং বিএনপিই সংস্কারের দল। তবে সব সিদ্ধান্তের কেন্দ্রে থাকতে হবে জনগণকে, এবং জনগণের সম্মতিতেই যেন সবকিছু হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার শুরুতেই তিনি এ মন্তব্য করেন। নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা গতকাল প্রধান উপদেষ্টাকে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি—বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয়। বিএনপি সব সময়ই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে উন্নয়ন এবং সংস্কারের পক্ষে। অথচ যখন কেউ সংস্কারের কথা বলেননি, তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ উপস্থাপন করেছিলেন।’
সংস্কারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে বিএনপির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শুরু হয়।
গণতন্ত্রের জন্য বিএনপির দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে নজরুল বলেন, ‘আবারো সামনে একটা সুযোগ এসেছে, সেটাকে আমরা কাজে লাগাতে চাই। এই কমিশন এবং সরকারকে সহযোগিতা করতেই আমরা আলোচনা করছি।’
তিনি আরও জানান, ঐকমত্য কমিশনের কোনো সনদ না হলেও, বিএনপির কাছে নিজেদের সংস্কারের সনদ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘সবকিছুর মূলে জনগণ। জনগণের সম্মতিতেই সবকিছু হওয়া উচিত। আর জনগণ কার মাধ্যমে সেই সম্মতি জানায়, তা আমরা জানি।’
আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং সাবেক সচিব নিরুজ্জামান খান।
ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানিয়েছে, এই আলোচনা আজ দিনভর চলতে পারে। আজ শেষ না হলে, আগামী সপ্তাহেও আবার বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন।
আলোচনার শুরুতে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য—একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা, যার মাধ্যমে দেশে একটি টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।’
প্রসঙ্গত, জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচন, বিচার বিভাগ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনসহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ খাতের ১৬৬টি সংস্কার সুপারিশ নিয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের মতামত চাওয়া হয়। ১৩ মার্চের মধ্যে সেই মতামত জমা দেওয়ার সময়সীমা থাকলেও ইতিমধ্যে দলগুলোর সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা শুরু করেছে ঐকমত্য কমিশন। এই আলোচনার মাধ্যমেই চূড়ান্ত জাতীয় সনদ তৈরি হবে এবং এর ভিত্তিতেই অনুষ্ঠিত হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন।