প্রকাশিত: : অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ০১:১৯ এএম
ধুমপান মস্তিস্কের ক্ষতি করে, ছবি: টিএনসি
বয়স ৫০-এ কোঠা পেরুলেই জীবনে অদ্ভূত সব রোগ-শোক বাসা বাঁধে। তাদেরই একটি ডিমেনশিয়া। এটি এমন একটি রোগ, যেখানে মস্তিষ্কের কোষ বা নিউরন ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে। এর জেরে চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা ও মনে রাখার ক্ষমতা লোপ পায়।
এ রোগের নানাবিধ কারণ থাকলেও ধূমপান ডিমেনশিয়া ঝুঁকির একটি প্রধান কারণ। মূলত ধূমপান রক্তনালীর ক্ষতি, মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমানো, দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাধ্যমে স্নায়ুকোষের ক্ষতি ঘটিয়ে মস্তিষ্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলেন, ধূমপান ত্যাগ করলে মস্তিষ্কের বয়সজনিত হ্রাস অনেকটাই ধীর হয়ে যায়। এমনকি ধূমপায়ী ব্যক্তি টানা ১০ বছর নিকোটিন গ্রহণ না করলে তার ও অধূমপায়ী ব্যক্তির ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি প্রায় সমান হয়ে যায়।
ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ১০টি ইউরোপীয় দেশের ৯ হাজার ৪৩৬ জনের ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপান ত্যাগ করলে মুখের ভাষা ও কথা বলার ক্ষমতার হ্রাসজনিত সমস্যা অর্ধেক কমে যায় আর স্মৃতিশক্তি হারানোর হার কমে ২০ শতাংশ।
গবেষকরা ধূমপান ত্যাগকারী ও অব্যাহত ধূমপায়ীদের মস্তিষ্কের ছয় বছরের কার্যক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করেছেন। ফলাফলে দেখা যায়, ধূমপান ত্যাগকারীদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ধূমপায়ীদের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল থাকে।
ব্রিটেনের অ্যালজাইমারস সোসাইটির গবেষণা পরিচালক ড. রিচার্ড ওকলি বলেন, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা, স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ ও অ্যালকোহল কম খাওয়ার পাশাপাশি ধূমপান ত্যাগ করা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। অ্যাকশন অন স্মোকিং অ্যান্ড হেলথের ডেপুটি চিফ এক্সিকিউটিভ ক্যারোলিন সেরনি বলেন, ধূমপান ত্যাগ করলে মস্তিষ্কের ক্ষতি ধীর হয়। বিশেষ করে মধ্যবয়সে ধূমপান ছাড়ার গুরুত্ব অনেক বেশি।
গবেষণা ও পরিসংখ্যান একসঙ্গে দেখাচ্ছে, মধ্যবয়সে ধূমপান ত্যাগ শুধু শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য নয়, মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্যও অপরিহার্য। সঠিক সময়ে ধূমপান ত্যাগ করলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি প্রায় শূন্যের কাছাকাছি আনা সম্ভব।