প্রকাশিত: : জুন ২৫, ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম
আম খেয়ে যেটা আমরা সাধারণত ফেলে দিই, সেই আমের বিচিই এখন হয়ে উঠেছে টাকার খনি। একসময় অবহেলার বস্তু হিসেবে ফেলে দেওয়া হতো যেটা, সেটাই আজ বিক্রি হচ্ছে দেশে-বিদেশে ভালো দামে। আমের বিচির চাহিদা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বাড়ছে সারা বিশ্বে। কারণ এতে রয়েছে অসাধারণ ভেষজ গুণ, পুষ্টিগুণ এবং কসমেটিক ও হারবাল পণ্যে এর বহুমুখী ব্যবহার।
বর্তমানে আমের বিচি শুকিয়ে তা গুঁড়া করে তৈরি করা হচ্ছে হারবাল চা, ডায়রিয়া ও আমাশয়ের প্রাকৃতিক ওষুধ, ওজন কমানোর সহায়ক খাদ্য, গ্লুটেন-মুক্ত ময়দা এবং প্রাকৃতিক প্রসাধনী। এর মধ্যে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন দুটি পণ্য হলো `ম্যাঙ্গো সিড অয়েল` এবং `ম্যাঙ্গো বাটার`, যা এখন আন্তর্জাতিক কসমেটিক ব্র্যান্ডগুলো নিয়মিত ব্যবহার করছে। বিশেষ করে ম্যাঙ্গো বাটার ত্বক ময়েশ্চারাইজ ও নরম রাখতে ব্যবহৃত হয়, যা স্কিন কেয়ারে দারুণ জনপ্রিয়।
বিশ্বের অনেক দেশ এখন আমের বিচি আমদানি করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা ম্যাঙ্গো সিড অয়েল ও হারবাল চা তৈরির জন্য আমের বিচি নিচ্ছে, ফ্রান্স ও ইউরোপের দেশগুলো প্রাকৃতিক প্রসাধনী পণ্যে ব্যবহার করছে, আর ভারত ও ফিলিপাইনের মতো দেশে খাদ্য ও ওষুধ শিল্পে এর ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে।
বাংলাদেশের আমচাষিদের জন্য এটা নতুন আয়ের পথ খুলে দিয়েছে। আগে আম বিক্রির পর বিচি ফেলে দেওয়া হতো, এখন অনেকেই বিচি আলাদা করে সংগ্রহ করে শুকিয়ে বিক্রি করছেন। এর দামও প্রতিনিয়ত বাড়ছে, ফলে কৃষকদের জন্য বাড়তি অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার হারবাল মার্কেটে আমের বিচির চাহিদা আরও বাড়বে। বাংলাদেশ চাইলে এটিকে একটি সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। একসময় অবহেলিত এই উপাদান এখন বিশ্ববাজারে কাঁচামাল হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে, আর অর্থনীতিতে যোগ করছে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত।