বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫

‍‍`মানবসৃষ্ট নরকে‍‍` পরিণত হওয়া গাজা পুনর্গঠনে প্রয়োজন ৭০ বিলিয়নেরও বেশি ডলার: জাতিসংঘ

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : নভেম্বর ২৬, ২০২৫, ০৫:২৪ পিএম

ইসরায়েলের হামলায় গাজা উপত্যকা মানবিক বিপর্যয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ জানায়, পুনর্গঠনে লাগতে পারে কয়েক দশকে ৭০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি, আর দুই বছরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২ বছরের উন্নয়ন অগ্রগতি—খাদ্য সংকটে অতিষ্ঠ ২৩ লাখ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে বহুস্তরীয় দারিদ্র্য ও টিকে থাকার সংকট।

‍‍`মানবসৃষ্ট নরকে‍‍` পরিণত হওয়া গাজা পুনর্গঠনে প্রয়োজন ৭০ বিলিয়নেরও বেশি ডলার: জাতিসংঘ

ইসরায়েলের হামলায় গাজা উপত্যকা ‘মানবসৃষ্ট নরকে’ পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা জানিয়েছে, অঞ্চলটি পুনর্গঠন করতে কয়েক দশকে ৭০ বিলিয়ন ডলারেরও (৫৩ বিলিয়ন পাউন্ড) বেশি খরচ হতে পারে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে চরমভাবে ‘বহুস্তরীয় দারিদ্র্যের শিকার’ হয়েছে অন্তত ২৩ লাখ মানুষ। বাসিন্দাদের ‘টিকে থাকার প্রতিটি স্তম্ভকে গভীরভাবে দুর্বল করে দিয়েছে’ এ যুদ্ধ।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ সময়কালে গাজার অর্থনীতি ৮৭ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। ফলে মাথাপিছু জিডিপি মাত্র ১৬১ ডলারে নেমে এসেছে। শুধু গাজা উপত্যকা নয়, দ্রুতগতিতে বসতি সম্প্রসারণ ও শ্রমিকদের চলাচলে বিধিনিষেধের ফলে ধ্বংস হয়েছে পশ্চিম তীরের অর্থনীতিও। রাজস্বের পতন ও ইসরায়েলি সরকারের অর্থ স্থানান্তর আটকে দেয়ার ফলে প্রয়োজনীয় সরকারি সেবা দিতে পারছে না ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। পুনরুদ্ধারে বিনিয়োগ করা আরো কঠিন হয়ে পড়েছে।

রেকর্ড পর্যায়ের অর্থনৈতিক সঙ্কোচন পশ্চিম তীর ও গাজায় বহু দশকের অগ্রগতিকে ধীর করে দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের শেষে ফিলিস্তিনের জিডিপি ২০১০ সালের স্তরে নেমে এসেছে, আর মাথাপিছু জিডিপি ফিরে গেছে ২০০৩ সালের অবস্থায়। অর্থাৎ দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ২২ বছরের উন্নয়ন অগ্রগতি বিলীন হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যাপক আন্তর্জাতিক সহায়তা পাওয়া গেলেও ২০২৩ সালের অক্টোবর-পূর্ববর্তী অর্থনৈতিক অবস্থায় ফিরতে কয়েক দশক লেগে যেতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা শান্তি পরিকল্পনার ২০ দফার তাৎক্ষণিক শর্তগুলো কীভাবে বাস্তবায়িত হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। দীর্ঘমেয়াদি পুনর্গঠন তো আরো অনিশ্চিত। তবে গত সপ্তাহে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা পরিকল্পনাকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এতে গাজায় একটি অন্তর্বর্তী টেকনোক্র্যাট ফিলিস্তিনি সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছে। যার তত্ত্বাবধায়ন করবে একটি আন্তর্জাতিক ‘শান্তি বোর্ড’ আর এতে সমর্থন দেবে একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী।

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার অধিকাংশ পরিবারই নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য কিনতে সক্ষম নয়। গাজার মানুষের খাদ্যতালিকা এখন মূলত শস্য, ডাল, সামান্য দুগ্ধজাত পণ্য ও তেলে সীমাবদ্ধ। মাংস, সবজি ও ফল প্রায় অনুপস্থিত। রান্নার গ্যাসের ঘাটতি তীব্র হওয়ায় বহু পরিবার প্লাস্টিকের বর্জ্যসহ বিকল্প জ্বালানিতে খাবার রান্না করতে বাধ্য হচ্ছে।

Link copied!