প্রকাশিত: : জুন ১৮, ২০২৫, ০৬:২২ পিএম
বাংলাদেশের জুতা রপ্তানি খাতে প্রথমবারের মতো ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলার আয়ের মাইলফলক অতিক্রম হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে দেশের জুতা রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১.১১ বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৩ হাজার ৭০০ কোটি।
এই রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় ছিল ৮৬ কোটি ডলার।
চামড়ার জুতা থেকে এসেছে ৬২ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৯ শতাংশ বেশি। পাশাপাশি চামড়াবিহীন (নন-লেদার) জুতা থেকেও এসেছে উল্লেখযোগ্য ৪৯ কোটি ডলার, যার প্রবৃদ্ধি ৩০ শতাংশের বেশি।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ এবং চীনে উৎপাদন ব্যয়ের বৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য নতুন বাজার তৈরি করেছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় মূল্যস্ফীতি কমে যাওয়ায় সেসব দেশের মানুষ আবার ভোগ্যপণ্য—including জুতা—কিনতে শুরু করেছে।
তবে রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে রপ্তানি আয় কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে চামড়া রপ্তানি কমেছে ৭.৮২ শতাংশ এবং চামড়াজাত অন্যান্য পণ্য রপ্তানি কমেছে ৩.৩৯ শতাংশ।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাপেক্স, আকিজ ও জেনিস সুজের নেতৃবৃন্দ মনে করছেন, সরকারি সহায়তা এবং চামড়াশিল্পে দক্ষ শ্রমিক ও কাঁচামাল ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে রপ্তানি আরও বাড়বে।
এদিকে চামড়াবিহীন জুতার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা দিন দিন বাড়ছে। ফ্যাশনেবল, সাশ্রয়ী ও টেকসই হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদা বেশি। ন্যাশনাল পলিমার গ্রুপের ‘এনপলি ফুটওয়্যার’ বর্তমানে মাসে ২৫ লাখ ডলারের চামড়াবিহীন জুতা রপ্তানি করছে। প্রতিষ্ঠানটি সক্ষমতা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নিচ্ছে।
বিশ্ববাজারে এখনো জুতা রপ্তানিতে বাংলাদেশের অংশ মাত্র ১.৭ শতাংশ। চীন, ভিয়েতনাম ও ভারতের মতো দেশের তুলনায় তা অনেক কম হলেও গতিশীল প্রবৃদ্ধি ও বৈশ্বিক চাহিদা বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে।