প্রকাশিত: : এপ্রিল ২৮, ২০২৫, ০৫:১৮ পিএম
দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশ যখন খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে সফল হয়েছে, তখন বাংলাদেশ এখনো লাল তালিকা থেকে বের হতে পারেনি। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই এখন খাদ্য মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বেশি।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ৬ শতাংশের নিচে। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় খাদ্যদ্রব্যের দাম কমছে, নেপাল ও মালদ্বীপেও মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের নিচে। অথচ বাংলাদেশে এখনো খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার প্রায় ৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব বলছে, মার্চ শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯.৩৫ শতাংশ। টানা দুই বছর ধরে বিশ্বব্যাংকের ‘লাল’ শ্রেণিতে রয়েছে বাংলাদেশ, যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৫ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে থাকে।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশের আগের সরকার উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ডলার বিনিময় হার নিয়েও ছিল দ্বিধাদ্বন্দ্ব। বাজারে নজরদারি দুর্বল থাকায় ও চাঁদাবাজি বন্ধ না হওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
২০২২ সালে বৈশ্বিক সংকটের সময় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান বড় ধাক্কা খেলেও এখন তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। শ্রীলঙ্কায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন মাইনাস ০.২ শতাংশ, পাকিস্তানে মাইনাস ৪.১ শতাংশ। ভারতেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন নিয়ন্ত্রণে, মাত্র ৫.৭ শতাংশ। আফগানিস্তান, নেপাল ও মালদ্বীপেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
বাংলাদেশে গত তিন বছর ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। টানা ১০ মাস খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের ওপরে। যদিও ফেব্রুয়ারি ও মার্চে তা এক অঙ্কের ঘরে নেমে এসেছে, এখনো গড় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০.৪৪ শতাংশ। অর্থাৎ, গত এক বছরে খাদ্যের দাম গড়ে ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি একধরনের অদৃশ্য করের মতো কাজ করে। আয় বাড়ছে না অথচ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞ সেলিম রায়হান মনে করেন, খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমাতে শুধু মুদ্রানীতির ওপর নির্ভর করলে হবে না। রাজস্বনীতি ও বাজার তদারকি আরও শক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।