ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধের মধ্যেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত দিলেন মাস্ক, জানালেন সম্ভাব্য নামও

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন করে আলোড়ন তুলেছেন ইলন মাস্ক। ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই ‘নতুন রাজনৈতিক দল’ গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছেন টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও। মাস্কের মতে, আমেরিকার ৮০ শতাংশ মধ্যমপন্থী জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে না বর্তমান রাজনৈতিক কাঠামো।

৬ জুন বৃহস্পতিবার, নিজ মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ এক জনমত জরিপ চালান মাস্ক। সেখানে তিনি তার ২২ কোটি অনুসারীর কাছে জানতে চান: “আমেরিকায় কি এখন এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সময় এসেছে, যা মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা ৮০ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করবে?” ভোটে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৮০ শতাংশই এতে সম্মতি জানান।

ভোটের ফলাফল সামনে আসার পর মাস্ক বলেন, “মানুষ তাদের মত দিয়েছে। এটাই নিয়তি।”

পরদিন তিনি একটি সম্ভাব্য দলের নামও প্রস্তাব করেন: "দ্য আমেরিকা পার্টি"। নামটি অনেকটা সাদৃশ্যপূর্ণ তার গঠিত ‘আমেরিকা পিএসি’র সঙ্গে একটি সুপার পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি, যার মাধ্যমে ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পসহ রিপাবলিকান প্রার্থীদের পক্ষে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেন তিনি।

এক সময় ডেমোক্র্যাট সমর্থক মাস্ক ২০১৬ ও ২০২০ সালে হিলারি ক্লিনটন ও জো বাইডেনকে ভোট দিলেও ২০২২ সালে জানান, তিনি রিপাবলিকানদের পক্ষে ভোট দেবেন। এরপর ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠেন এবং ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’-এর প্রধান হিসেবেও নিয়োগ পান।

তবে সেই সম্পর্ক এখন ভেঙে পড়েছে। সম্প্রতি ট্রাম্প-সমর্থিত ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’-কে মাস্ক ‘জঘন্য’ বলে অভিহিত করেন এবং তা বাতিল করার আহ্বান জানান। এরপর সামাজিক মাধ্যমে দুজনের মধ্যে বাকযুদ্ধ চরমে ওঠে।

মাস্ক অভিযোগ করেন, ট্রাম্পের নাম যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িত জেফ্রি এপস্টেইনের নথিতে থাকতে পারে—যদিও এ বিষয়ে তিনি কোনো প্রমাণ দেননি এবং পরে সেই পোস্ট মুছে ফেলেন। এমনকি এক পর্যায়ে মাস্ক ট্রাম্পকে অভিশংসনের আহ্বান জানান এবং ভ্যান্সকে তার পরিবর্তে বসানোর পক্ষে মত দেন।

ট্রাম্পও পাল্টা জবাবে বলেন, “ইলনের প্রতি আমার ধৈর্য ফুরিয়ে গিয়েছিল।” তাই তিনি মাস্ককে হোয়াইট হাউস ছাড়তে বলেছিলেন।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাস্কের দল গঠনের ইঙ্গিত আপাতত কৌশলগত অবস্থান হতে পারে। ফ্লোরিডার রিপাবলিকান প্রতিনিধি জিমি প্যাট্রোনিস বলেন, “ইলন মাস্ক নতুন কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছেন না… ডিসিতে এমন দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। এক মাস পর এদের আবার একসঙ্গে দেখা যাবে।”