শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

বড় সংগীতশিল্পী হতে চান নতুন কুঁড়ি চ্যাম্পিয়ন শুভমিতা ও প্রেয়সী

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : নভেম্বর ২০, ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম

দুই দশকের বিরতির পর ফিরে আসা নতুন কুঁড়ি ২০২৫-এ ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন শুভমিতা তালুকদার ও প্রেয়সী চক্রবর্তী—সঙ্গীতযাত্রা, প্রস্তুতি ও স্বপ্নের কথা জানালেন তারা।

বড় সংগীতশিল্পী হতে চান নতুন কুঁড়ি চ্যাম্পিয়ন শুভমিতা ও প্রেয়সী

প্রায় দুই দশকের বিরতির পর আবার শুরু হয় নতুন কুড়ি ২০২৫। এ আয়োজনে বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে ‘ক’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হন প্রেয়সী চক্রবর্তী এবং ‘খ’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হন শুভমিতা তালুকদার। শুরু থেকে তাদের নতুন কুঁড়ির জার্নি, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতি ও নানা বিষয় নিয়ে দুজনের সঙ্গে কথা বলেছেন অহিদুর রহমান।

মায়ের কাছেই সংগীতের হাতেখড়ি আমার

নতুন কুঁড়িতে অংশ নেয়ার প্রথম মুহূর্তটি কেমন লেগেছিল?

প্রথমে খুবই ভালো লেগেছিল যে ‘নতুন কুঁড়ি’র মতো একটা বিখ্যাত প্রতিযোগিতায় আমি অংশগ্রহণ করতে পেরেছি। প্রতিযোগিতার সবকিছুই আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।

প্রতিযোগিতার কোন বিষয়গুলো কঠিন বা চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে?

প্রতিটি রাউন্ডই অনেক কঠিন ছিল। সঠিক চর্চা থাকার কারণে আমার কাছে প্রতিটি ধাপ সহজ হয়ে গেছে। আমি প্রতিটি ধাপেই ভয়হীন পারফরম্যান্স করেছি। প্রতিযোগিতার আগে আমি অনেক প্র্যাকটিস করে গিয়েছিলাম।

যখন শুনলেন ‘খ’ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, তখন কেমন লেগেছিল?

তখন খুবই ভালো লেগেছিল। বাংলাদেশের বিখ্যাত সব মানুষের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছি—সে মুহূর্তটা খুবই ভালো লেগেছে।

গানের শুরুটা কীভাবে হয়েছিল?

আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন আমার মা-ই আমাকে প্রথম সংগীত শিখিয়েছেন। সংগীতের হাতেখড়ি আমার মায়ের কাছেই হয়েছে। তারপর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আমি জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ভর্তি হয়েছি। আর বর্তমানে আমি শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার চন্দ্রের কাছে সংগীত শিখছি। আর রবীন্দ্রসংগীত শিখছি শ্রদ্ধেয় অনিমেষ বিজয় চৌধুরী স্যারের কাছে।

নতুন কুঁড়ির প্রস্তুতিটা কেমন ছিল?

নতুন কুঁড়ির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শ্রদ্ধেয় সন্তোষ কুমার স্যার সবসময় আমার সঙ্গে ছিলেন। তিনি থাকায় আমার জন্য প্রস্তুতি নেয়াটা অনেক সহজ হয়ে যায়। তিনি আমাকে বিশেষভাবে তৈরি করেছেন। আর রবীন্দ্রসংগীতের ক্ষেত্রে অনিমেষ বিজয় স্যারের সঙ্গে অনলাইনে প্র্যাকটিস করেছি, তিনিও আমাকে যথেষ্ট সাপোর্ট করেছেন।

বড় হলে কোন ধরনের গান করতে চান?

আমার সব ধরনের গানই ভালো লাগে। যখন বড় হব তখন আসলে বুঝতে পারব কোনটাতে যাব। আমি সব ধরনের গানই ভালোবাসি।

কোন গান অপেক্ষাকৃত কঠিন মনে হয়?

আমার কাছে কোনো গানই কঠিন মনে হয় না। মোটামুটি সব ধরনের গানই আমার কাছে ভালো লাগে এবং সহজ মনে হয়। কারণ আমি ছোট থেকে সব ধরনের গানই প্র্যাকটিস করে এসেছি।

কোন শিল্পীর গান শুনতে ভালো লাগে?

আমাদের দেশের অনেক শিল্পীরই গান শুনি। তাদের মধ্যে কয়েকজন খুব প্রিয়। যেমন নজরুলসংগীতের ক্ষেত্রে শ্রদ্ধেয় ফেরদৌস আরা ম্যাম ও প্রিয়াঙ্কা গোপ ম্যামের গান ভালো লাগে। আবার রবীন্দ্রসংগীতে শ্রদ্ধেয় রিজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ম্যামের গান ভালো লাগে।

পড়াশোনার পাশাপাশি কীভাবে গানের চর্চা করেন?

পড়াশোনার পাশাপাশি যেহেতু গান করি, তাই চেষ্টা করি ব্যালান্স করার। আমি যখন পড়ায় বসি, তখন পড়ার প্রতি পুরো মনোযোগ থাকে। যখন গান চর্চা করি, তখন পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে গান প্র্যাকটিস করি।

বড় হয়ে কী হতে চান?

আমার ইচ্ছা আছে সংগীত নিয়ে পড়াশোনা করার। আমাদের দেশে যে ভালো ভালো সংগীতশিল্পী আছেন, তাদের মতো ভালো শিল্পী হতে চাই।

গান গেয়ে সবার মন জয় করতে চাই

নতুন কুঁড়িতে প্রথম যখন গেয়েছেন, কেমন লেগেছিল?

আমার খুবই ভালো লেগেছে। তবে প্রথমে একটু নার্ভাস লেগেছিল, কিন্তু পরে গাইতে গাইতে আর ভয় লাগেনি। আমি খুব এনজয় করেছি। বিচারকরা আমাকে অনেক আদর করেছেন এবং অনেক উৎসাহ দিয়েছেন।

সংগীতচর্চার পথে আপনাকে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ কে দেন?

আমার মা-বাবা এবং আমার দিদি আমাকে গান শেখা ও গান করা দুইদিকেই সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দেন। এছাড়া আমার গুরুজি ড. অসিত রায় আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন।

নতুন কুঁড়িতে গান করতে গিয়ে কখনো ভয় লেগেছে বা কঠিন মনে হয়েছে?

আমার কাছে গান করাটা একদম সহজ মনে হয়েছে। একেবারেই কঠিন বা ভয় এমন কিছুই লাগেনি। আমার মনে হয়েছিল আমি পারব, আমার নিজের ওপর বিশ্বাস ছিল যে আমি পারব। কারণ আমি আগে থেকেই অনেক প্র্যাকটিস করেছি, তাই ভয় লাগেনি।

কখনো ভেবেছিলেন চ্যাম্পিয়ন হবেন?

আমি একদম ভাবিনি যে আমি চ্যাম্পিয়ন হব বা সেরা শিশু হব। তবে আমি ভেবেছিলাম যে কোনো একটা পজিশন আমি পাব।

‘ক’ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে কেমন লাগছে?

আমার খুবই আনন্দ লাগছে। যখন আমার আব্বু-আম্মু বললেন যে আমি চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, তখন আমার অনেক ভালো লেগেছে, কারণ আমি কখনো ভাবিনি যে আমি চ্যাম্পিয়ন হব। তখন আমি অনেক আনন্দ পেয়েছি। আমার স্কুলের স্যাররাও আমাকে অনেক আদর করেছেন এবং প্রশংসা করেছেন।

কোন ধরনের গান গাইতে বেশি ভালো লাগে?

আমি আধুনিক, রবীন্দ্র, নজরুল সব ধরনের গানই গাইতে চাই। সব ধরনের গানের চর্চা চালিয়ে যাব।

কোন সংগীতশিল্পীর গান ভালো লাগে?

আমি সাবিনা ইয়াসমিন ম্যামের গান শুনি। শাকিলা জাফর ম্যামের গানও শুনি। শাহনাজ রহমতুল্লাহ ম্যামের গানও শুনি। তাদের গান আমি গেয়েছি এবং তাদের গান চর্চাও করি।

পড়াশোনার পাশাপাশি গান কখন করেন?

আমি গানের প্র্যাকটিস সকালেও করি আবার রাতেও করি। সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে প্র্যাকটিস করি, আবার স্কুল থেকে আসার পরও রেওয়াজ করি। হারমোনিয়াম বাজাই। পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটা সময় গান চর্চা করি।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি ক্রেডিট কার?

আমি সবচেয়ে বেশি ক্রেডিট আমার দিদিকে দিতে চাই। আমার বাবা-মাকেও দিতে চাই, তবে সবার আগে আমার দিদিকে দেব। কারণ দিদিই আমাকে গান শিখিয়েছেন, সব ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন এবং প্রতিটি ধাপে সাহায্য করেছেন।

গান নিয়ে ভবিষ্যতে আপনার কী স্বপ্ন?

আমি ভালো সংগীতশিল্পী হতে চাই। গান গেয়ে সবার মন জয় করতে চাই। সবাই আমার প্রশংসা করবে, আমি সবার প্রিয় হব—এটাই চাই।

Link copied!