প্রকাশিত: : জুন ২৬, ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম
বাংলাদেশ জাতিসংঘের আন্তঃসীমান্ত জলপথ ও আন্তর্জাতিক হ্রদ সুরক্ষা সংক্রান্ত পানি কনভেনশনে যোগ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। সোমবার বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে এই কনভেনশনে যোগ দেয়, যা বিশ্বব্যাপী পানি সহযোগিতা ও টেকসই ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক।
এর আগে ২০১২ সাল থেকেই বাংলাদেশ এই কনভেনশনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে আসছিল এবং ২০২৪ সালের অক্টোবরে স্লোভেনিয়ায় অনুষ্ঠিত পক্ষদেশসমূহের দশম সম্মেলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়।
১৯৯২ সালের ১৭ মার্চ গৃহীত জাতিসংঘের পানি কনভেনশন মূলত আন্তঃসীমান্ত ভূপৃষ্ঠ ও ভূগর্ভস্থ পানির টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং সহযোগিতা জোরদারের উদ্দেশ্যে তৈরি হয়। প্রাথমিকভাবে এটি একটি আঞ্চলিক উদ্যোগ থাকলেও ২০১৬ সালের ১ মার্চ থেকে এটি জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বর্তমানে কনভেনশনে আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার ৫৬টি দেশ সদস্য এবং আরও ২০টির বেশি দেশ যোগদানের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ একটি নদীবেষ্টিত ব-দ্বীপ রাষ্ট্র, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদী প্রবাহিত হয় বাংলাদেশ দিয়ে, যার মধ্যে গঙ্গা (পদ্মা), ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা অন্যতম। এ অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য আন্তঃসীমান্ত পানি ব্যবস্থাপনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ উচ্চ বন্যা ঝুঁকিতে রয়েছে, যা বিশ্বের মধ্যে নেদারল্যান্ডস ছাড়া অন্য কোনও দেশের চেয়ে বেশি। প্রতিবছর গড়ে দেশের ২০-২৫ শতাংশ এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়, আর চরম বন্যার সময় সেই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫-৬০ শতাংশে। নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থার বাইরে রয়েছে ৬ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ।
এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ পানি কনভেনশনে যোগ দিয়ে শুধু আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক পর্যায়েও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা ও আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতার একটি দৃঢ় বার্তা দিয়েছে।