মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় উৎসাহ হারাচ্ছে ধনী দেশ, পথ দেখাচ্ছে চীন

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : নভেম্বর ১০, ২০২৫, ০৩:০৯ পিএম

ধনী দেশগুলোর আগ্রহ কমলেও চীন নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন কপ৩০ সম্মেলনের প্রধান আন্দ্রে কোরিয়া দো লাগো। তিনি সতর্ক করেছেন, প্রতিশ্রুতি নয়— জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এখনই বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।

জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় উৎসাহ হারাচ্ছে ধনী দেশ, পথ দেখাচ্ছে চীন

জাতিসংঘের আসন্ন জলবায়ু আলোচনা (কপ৩০) সম্মেলনের প্রধান আন্দ্রে কোরিয়া দো লাগো বলেছেন, জলবায়ু সংকট মোকাবেলার প্রতি ধনী দেশগুলোর আগ্রহ কমে গেছে, যেখানে চীন নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন ও ব্যবহারে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

অ্যামাজন রেইনফরেস্টের বেলেম শহরে আয়োজিত কপ৩০ সম্মেলনের প্রাক্কালে ব্রাজিলীয় কূটনীতিক লাগো সাংবাদিকদের বলেন, গ্লোবাল নর্থ অর্থাৎ, ধনী দেশগুলোর উৎসাহ কমে যাওয়া থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, গ্লোবাল সাউথ বা উন্নয়নশীল দেশ এক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বিশ্বের বৃহত্তম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও চীনের প্রশংসা করেন।

তিনি উদাহরণ দেন চীনের, যেটি একদিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্বন নিঃসরণকারী দেশ, আবার একই সঙ্গে সবচেয়ে বড় সবুজ জ্বালানি উৎপাদক ও ভোক্তা। দো লাগো বলেন, ‘সৌর প্যানেল এখন আগের চেয়ে সস্তা ও প্রতিযোগিতামূলক— জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় এগুলো ভালো বিকল্প। জলবায়ুর দৃষ্টিতে এটি শুভ লক্ষণ।‘ তিনি ধনী দেশগুলোকে প্রতিযোগিতা নিয়ে অভিযোগ না করে চীনের পথ অনুসরণ করার আহ্বান জানান।

কপ৩০ এর মূল লক্ষ্য হলো প্যারিস চুক্তিতে নির্ধারিত ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা বৃদ্ধির সীমা বজায় রাখার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা, জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার একটি রোডম্যাপ তৈরি করা এবং দরিদ্র দেশগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিত করা। বর্তমানে বিভিন্ন দেশের নির্গমন কমানোর পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন না হলে তাপমাত্রা ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে পারে, যা হবে অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক।

তবে সম্মেলন শুরুর আগেই একাধিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ইঙ্গিত মিলছে। কপ২৬-এ গৃহীত গ্লোবাল মিথেন প্লেজ অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে মিথেন নিঃসরণ ৩০ শতাংশ কমানোর কথা ছিল। কিন্তু নতুন স্যাটেলাইট তথ্য দেখাচ্ছে— যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কুয়েত, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও ইরাকের সম্মিলিত নিঃসরণ ২০২০ সালের তুলনায় ৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিথেন কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়ে ৮০ গুণ বেশি ক্ষতিকর এবং সাম্প্রতিক উষ্ণায়নের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী। তাই স্বেচ্ছায় দেয়া প্রতিশ্রুতি যথেষ্ট নয়— এখনই বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক চুক্তির সময় এসেছে।

দো লাগো শেষবারের মতো মনে করিয়ে দেন, ‘সময় ফুরিয়ে আসছে। জলবায়ু সংকট থামাতে হলে শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, এখনই বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।‘

Link copied!