রবিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৫

ইতালিতে ৪,৪০০ জনকে যৌন নিপীড়ন, ক্যাথলিক পুরোহিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ০৫:০৭ পিএম

ইতালিতে ক্যাথলিক গির্জার পুরোহিতদের হাতে অন্তত ৪ হাজার ৪০০ মানুষ যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী সংগঠন ‘রেতে ল’আবুসো’। বহু বছরের অভিযোগের পরও গির্জা কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা ও গোপন নীতির সমালোচনা করেছে ভ্যাটিকানের শিশু সুরক্ষা কমিশন।

ইতালিতে ৪,৪০০ জনকে যৌন নিপীড়ন, ক্যাথলিক পুরোহিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

বহু বছর ধরেই বিশ্বব্যাপী শিশু নির্যাতন ও তা গোপন করার অভিযোগের সম্মুখীন ক্যাথলিক গির্জা। ইতালিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। স্থানীয় গির্জা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে তুলনামূলক বাড়তি রক্ষণশীল ভূমিকা নিয়েছে।

ইতালিতে অন্তত ৪ হাজার ৪০০ মানুষ ক্যাথলিক পুরোহিতদের হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলেছে দেশটির বৃহত্তম ভুক্তভোগী সংগঠন রেতে ল’আবুসো। সংগঠনটির দাবি, ২০২০ সালের পর থেকে প্রকাশিত মামলাগুলোর ভিত্তিতে এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। খবর রয়টার্স।

রেতে ল’আবুসোর প্রতিষ্ঠাতা ফ্রানচেস্কো জানারদি জানান, ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য, বিচারিক সূত্র এবং মিডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে এ হিসাব এসেছে। তবে এসব নির্যাতন ঠিক কোন সময় থেকে শুরু হয়েছিল, সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়নি।

রেতে ল’আবুসোর প্রতিবেদনে বলা হয়, সংগঠনটি এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৫০টি সন্দেহভাজন নির্যাতনের মামলা নথিভুক্ত করেছে। সেগুলোর মধ্যে ১ হাজার ১০৬টি ঘটনায় পুরোহিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। অন্য মামলাগুলোয় অভিযুক্ত হিসেবে আছেন নান, ধর্মশিক্ষক, সাধারণ স্বেচ্ছাসেবক, শিক্ষাবিদ ও স্কাউট সদস্যরা।

মোট ৪ হাজার ৬২৫ জন ভুক্তভোগীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে — যাদের মধ্যে ৪ হাজার ৩৯৫ জনই পুরোহিতদের হাতে নির্যাতনের শিকার। এর মধ্যে ৪ হাজার ৪৫১ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক, আর ৪ হাজার ১০৮ জন পুরুষ। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৫ জন নান, ১৫৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১১ জন প্রতিবন্ধী।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত ১ হাজার ১০৬ পুরোহিতের মধ্যে মাত্র ৭৬ জনের বিরুদ্ধে গির্জা অভ্যন্তরীণভাবে বিচার করেছে। এদের মধ্যে ১৭ জনকে সাময়িক বরখাস্ত, ৭ জনকে অন্য এলাকায় সরিয়ে দেয়া, আর ১৮ জনকে পুরোহিত পদ থেকে বহিষ্কার বা পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।

অন্যদিকে ৫ জন অভিযুক্ত আত্মহত্যা করেছেন।

ইতালির ক্যাথলিক বিশপ সম্মেলন (সিইআই) প্রতিবেদনটি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি। গত সপ্তাহেই ভ্যাটিকানের শিশু সুরক্ষা কমিশন এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগে ইতালীয় বিশপদের কঠোর সমালোচনা করেছিল।

বহু বছর ধরেই বিশ্বব্যাপী শিশু নির্যাতন ও তা গোপন করার অভিযোগের সম্মুখীন ক্যাথলিক গির্জা। ইতালিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। স্থানীয় গির্জা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে তুলনামূলক বাড়তি রক্ষণশীল ভূমিকা নিয়েছে। কোনো ধরনের অসদাচরণের অভিযোগ যাতে গোপন করা না হয় সে ব্যাপারে নতুন বিশপদের নির্দেশ দিয়েছেন নবনিযুক্ত পোপ লিও। তিনি এই সপ্তাহে প্রথমবারের মতো নির্যাতনের শিকার কয়েকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

গত ১৬ অক্টোবর প্রকাশিত ভ্যাটিকানের শিশু সুরক্ষা কমিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতালির ২২৬টি ডায়োসিসের (গির্জা অঞ্চল) মধ্যে মাত্র ৮১টি শিশু সুরক্ষাবিষয়ক প্রশ্নপত্রের উত্তর দিয়েছে — যা কমিশনের মতে ‘চরমভাবে হতাশাজনক’।

Link copied!