মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

এক লাখ কোটি ডলার বিনিয়োগের লক্ষ্য নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছেন ট্রাম্প

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : মে ১৩, ২০২৫, ০১:৫১ পিএম

এক লাখ কোটি ডলার বিনিয়োগের লক্ষ্য নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এআই জেনারেটেড

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে এক ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন। আজ মঙ্গলবার তিনি সৌদি আরবে পৌঁছাবেন, যেখানে তার সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করা এবং দেশটিতে বড় পরিসরে বিদেশি বিনিয়োগ আনয়নের চেষ্টা।

ওয়াশিংটনের মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক ক্যারেন ইয়ং জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই সফরকে ঘিরে একটি চিত্র ফুটিয়ে তুলতে চান, যেখানে দেখা যাবে কীভাবে এই বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং দেশীয় শিল্পকে চাঙ্গা করবে। এ সফরে তিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং এরপর উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতাদের সম্মেলনে যোগ দেবেন। সফরের পরবর্তী গন্তব্য কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

ট্রাম্পের এই সফর উপসাগরীয় অঞ্চলের প্রতি তাঁর প্রশাসনের বিশেষ গুরুত্বের প্রতিফলন। এর মাধ্যমে তিনি আবারও দেখাতে চাইছেন যে, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি অনুসরণ করে কীভাবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চান। সফর ঘিরে ওয়াল স্ট্রিট এবং সিলিকন ভ্যালির শীর্ষ নির্বাহীরা সৌদি আরবের বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগ দিতে ছুটছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বাড়াতে সৌদি আরব ও ইউএই বড় ধরনের অঙ্গীকার করেছে। সৌদি যুবরাজ ইতিমধ্যে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন, তবে ট্রাম্পের লক্ষ্য তা বাড়িয়ে এক ট্রিলিয়নে নেওয়া। অন্যদিকে ইউএই আগামী এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে।

তবে এসব বিনিয়োগের বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁরা বলছেন, এগুলো মূলত দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ।

এ সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, সৌদি আরবের সঙ্গে বিশাল সামরিক সরঞ্জাম চুক্তি। প্রস্তাবিত চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের অস্ত্র বিক্রি করতে পারে। এ চুক্তি আবারও দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সম্পর্কের জোরদার ইঙ্গিত দেয়।

একই সঙ্গে সফরে প্রযুক্তি খাতেও আলোচনা হবে। উপসাগরীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার চায়। আমিরাত এই খাতে একটি বৈশ্বিক কেন্দ্র গড়ে তুলতে চায়।

এ সফর শুধু যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রেই নয়, সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিকল্পনার আওতায় সৌদি সরকার অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করতে বিশাল অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে।

তবে গত তিন বছর ধরে সৌদি আরবে বিদেশি বিনিয়োগ কমছে, যা দেশটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তেলের দাম কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক চাপও বাড়ছে।

এ অবস্থায় ট্রাম্পের সফর উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক পুনরায় শক্তিশালী করার একটি সুযোগ। সৌদি বিশ্লেষক আলি শিহাবি বলেন, ‘ট্রাম্প এমন একটি বার্তা দিতে চান, যা আমেরিকায় বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি বহন করবে—এই সফরেই সেটা তিনি পেয়ে যাবেন।’

Link copied!