প্রকাশিত: : মে ৭, ২০২৫, ০৩:৫৯ পিএম
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আবারও বাংলাদেশে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা।
আরাকান আর্মির নিপীড়ন বাড়ানোর কারণে মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন ৩০-৪০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নজরদারি বাড়ালেও, রোহিঙ্গারা দুর্গম ও কঠিন পথ ব্যবহার করার কারণে তা কার্যকর করা যাচ্ছে না। সীমান্তের দুই পাশের দালালরা তাদের শরণার্থী শিবিরে পৌঁছাতে সাহায্য করছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির নিপীড়ন ক্রমাগত বাড়ছে, যার কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা করছেন শিবিরের নেতারা। বর্তমানে, রাখাইনের ৮০ শতাংশেরও বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে আরাকান আর্মি। এক রোহিঙ্গা যুবক জানাচ্ছেন, আরাকান আর্মি জোরপূর্বক তাদের নিয়োগ করার চেষ্টা করছে, আর অনেকেই পালিয়ে যাচ্ছে। তবে, আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে গ্রামবাসীদের গ্রেপ্তার করছে এবং বাড়ি-ঘর লুট করছে।
গত রোববার, মংডুর সিকদারপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে আরাকান আর্মি ১০ জনকে আটক করেছে এবং পাঁচটি বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। সীমান্তের উভয়পাশে রোহিঙ্গাদের বাড়ি পুড়িয়ে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত নতুন করে এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে, এবং তাদের খাদ্য সহায়তা টোকেন দেওয়া হয়েছে। তবে, এসব নতুন রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি পুরোনো রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিরাও তালিকাভুক্ত হয়েছে।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মো. জুবায়ের বলেছেন, আরাকান আর্মি জাতিগত নিধন চালাচ্ছে এবং এই নিপীড়ন অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশে আরেকটি বড় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ হতে পারে।
টেকনাফে বিজিবি কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, সীমান্তে কঠোর নজরদারি থাকলেও রোহিঙ্গারা পাচারকারীদের সহায়তায় দুর্গম পাহাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি নিয়মিত কৌশল পরিবর্তন করছে এবং অনেক রোহিঙ্গাকে সম্প্রতি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।